মশা তাড়ানোর ঘরোয়া উপায়

745
0
Share:

গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি বিরক্তিকর উপদ্রব বাড়তে থাকে। এই বিরক্তিকর উপদ্রব হচ্ছে মশা। অতিরিক্ত গরম আর মশার যন্ত্রণার কারণে মশারির ভেতরে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মশার স্প্রে, মশার কয়েল কোন কিছুতেই যেন কাজ হয় না। যদি এই দুটার একটাও শেষ হয়ে যায় তাহলে তোহ রক্ষা নাই।

আপনার রাতের ঘুম হারাম। কিন্তু আপনি কি জানেন খুব সহজে এই মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আগেকার যুগে মশার কয়েল, স্প্রে তো কিছুই ছিল না। তখনকার মানুষ কিভাবে মশার হাত থেকে রক্ষা পেত? অবাক হলেও এটা সত্যি যে তারা প্রাকৃতিক উপায়ে মশা তাড়াত। ভাবচ্ছেন কিভাবে সম্ভব?

তাহলে আজ জানাবো আপনাদের প্রাকৃতিক উপায়ে মশার হাত থেকে মুক্তি পাবার উপায়।

লেবু ও লবঙ্গের ব্যবহার: একটি গোটা লেবু খণ্ড করে কেটে নিন। এরপর কাটা লেবুর ভেতরের অংশে অনেক গুলো লবঙ্গ গেঁথে দিন। লেবুর মধ্যে লবঙ্গের পুরোটা ঢুকাবেন শুধুমাত্র লবঙ্গের মাথার দিকের অংশ বাইরে থাকবে।

এরপর লেবুর টুকরা গুলো একটি প্লেটে করে ঘরের কোণায় রেখে দিন। ব্যস, এতে বেশ কয়েকদিন মশার উপদ্রব থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। এই পদ্ধতিতে ঘরের মশা একেবারেই দূর হয়ে যাবে। আপনি চাইলে লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে জানালার গ্রিলেও রাখতে পারেন। এতে করে মশা ঘরেই ঢুকবে না।

কর্পূরের ব্যবহার: মশা কর্পূরের গন্ধ একেবারেই সহ্য করতে পারে না। আপনি যে কোন ফার্মেসিতে গিয়ে কর্পূরের ট্যাবলেট কিনে নিতে পারেন। একটি ৫০ গ্রামের কর্পূরের ট্যাবলেট একটি ছোট বাটিতে রেখে বাটিটি পানি দিয়ে পূর্ণ করুন। এরপর এটি ঘরের কোণে রেখে দিন। তাৎক্ষণিকভাবেই মশা গায়েব হয়ে যাবে। দুই দিন পর পানি পরিবর্তন করে নিন। আগের পানিটুকু ফেলে দিবেন না।

এই পানি ঘর মোছার কাজে ব্যবহার করলে ঘরে পিঁপড়ের যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি পাবেন।রসুনের স্প্রে: রসুনের স্প্রে মশা তাড়াতে খুবই কার্যকারী প্রাকৃতিক উপায়। ৫ ভাগ পানিতে ১ ভাগ রসুনের রস মেশান। মিশ্রণটি একটি বোতলে ভরে শরীরের যেসব স্থানে মশারা কামড়াতে পারে সেসব স্থানে স্প্রে করুন। এতে করে যে কোন ধরণের রক্ত চোষারা আপনার ধারে কাছেও আসবেনা।

নিমের তেলের ব্যবহার: নিমে মশা তাড়ানোর বিশেষ গুণ রয়েছে। সমপরিমাণ নিম তেল ও নারকেল তেল মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন। মশা ধারে-কাছেও ভিড়বে না। আর নিমের তেল ত্বকের জন্যও ভালো। ত্বকের অ্যালার্জি, ইনফেকশনজনিত নানা সমস্যাও দূর হবে এই তেলের মিশ্রণ ব্যবহারে। পানিতে নিমপাতা সিদ্ধ করে ঠাণ্ডা হলে স্প্রে বোতলে নিয়ে ঘরে স্প্রে করুন। মশা দূর হয়ে যাবে। শুকনো নিমপাতা পোড়ালে সেই গন্ধে কয়লা বা কাঠ-কয়লার আগুনে নিমপাতা পোড়ালে যে ধোঁয়া হবে, তা মশা তাড়ানোর জন্য খুবই কার্যকর।

পুদিনার ব্যবহার: জার্নাল অফ বায়োরিসোর্স টেকনোলোজির গবেষণা মতে তুলসির মতো পুদিনা পাতারও রয়েছে মশা দূরে রাখার ক্ষমতা। শুধু মশাই নয় পুদিনার গন্ধ অনেক ধরণের পোকামাকড়কে ঘর থেকে দূরে রাখে। পুদিনা পাতা ছেঁচে নিয়ে পানিতে ফুটিয়ে নিন। এই পানির ভাপ পুরো ঘরে ছড়িয়ে দিন। দেখবেন ঘরের সব মশা পালিয়েছে। চাইলে পুদিনার তেলও গায়ে মাখতে পারেন।

হলুদ বাতি: ঘরে মশার উত্পাত কমাতে চাইলে, হলুদ আলোর বৈদ্যুতিক বাতি বেছে নিন কিংবা বাতিটি সেলোফেনে জড়িয়ে নিন। দেখবেন মশা কমে গেছে, কারণ মশা হলুদ আলো থেকে দূরে থাকতে চায়। এ ছাড়া ঘরে ও ঘরের বাইরে লাইট বাল্বগুলো পরিবর্তন করুন। মশা সাধারণত সব আলোর প্রতি আকৃষ্ট হয় না। এলইডি লাইট, হলুদ ‘বাগ লাইট’ বা সোডিয়াম লাইট এ ক্ষেত্রে উপকারী। এগুলো জ্বালালে সন্ধ্যাবেলা ঘরে-বাইরের টহল মশাদের আক্রমণ অনেকটাই কমে যাবে।

Share: